Header Ads

Header ADS

বর্ষার শুরুতে শরীয়তপুরে মারাত্বক ভাবে দেখা দিচ্ছে নদী ভাঙ্গন, এক মুহূর্তেই নদী সব কিছু বিলীন করে দিলো (ভিডিও সহ)

বর্ষা শুরু হতে না হতেই শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলায় পদ্মায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। দিন যত পার হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙন ততই তীব্র আকার ধারণ করছে। ভাঙনে দিশেহারা মানুষগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তাই ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের কাছে দ্রুত বেড়িবাঁধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এদিকে ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি। নদী পাড়ের বাসিন্দারা তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ করছেন। এমনকি রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মাদরাসা, মসজিদও হুমকির মুখে রয়েছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর ডান তীর নড়িয়ার বাঁশতলা এলাকায় হঠাৎ করে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নড়িয়ার বিলাসপুর, পাচুখারকান্দি, ইশ্বরকাঠি, বাঁশতলা, মুলফৎগঞ্জ, সাধুরবাজার গ্রামে কয়েকশ মিটার ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। ভাঙতে শুরু করেছে সুরেশ্বর, চরমহন, হালসার, মূলপাড়া, কেদারপুর, চর নড়িয়া, সাহেবের চর, পূর্ব নড়িয়া, পাঁচগাও, চর জাজিরা, মাদবর কান্দি ও শেরআলী কান্দী। এতে পদ্মা পাড়ের এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

গত দুই বছরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ৮ হাজার বসত বাড়ি, ১৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ১ কিলোমিটার সুরেশ্বর রক্ষা বাঁধ, ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫৫ মসজিদ মাদরাসাসহ প্রায় ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার সম্পদ।

এ ক্ষতি এড়াতে নড়িয়া-জাজিরা উপজেলার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প গত ২ জানুয়ারি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পের আওতায় দুই উপজেলায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ ও চর ড্রেজিং করা হবে।

কিন্তু এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, একনেকে অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি বর্তমানের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালানো হবে বলে জানান তারা।

মূলপাড়া গ্রামের আব্দুল গণি ছৈয়াল ও বাঁশতলা গ্রামের আলমগীর হোসেন আলম বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভাঙন দেখা দিয়েছে। জানি না ভিটেমাটি নিয়ে এ বছর থাকতে পারবো কিনা। বর্ষার শুরুতেই ভাঙন শুরু হওয়ায় ভয় হচ্ছে।

নড়িয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাঁশতলা গ্রামের আব্দুল লতিফ বেপারী বলেন, অব্যাহত ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফেজ সানাউল্লাহ্ বলেন, নদী ভাঙনের ভয়াবহতা এতো বেশি যে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়ি অথবা স্থাপনা নদীতে চলে যাচ্ছে। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, যেভাবে ভাঙছে তাতে নড়িয়া উপজেলাটিই কিছু দিনের মধ্যে শরীয়তপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তারেক হাসান বলেন, ভাঙন শুরুর বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে অস্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালানো হবে।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন জানান, জেলা প্রশাসক সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজঃ জাগোনিউজ২৪ ডটকম

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ 
শরীয়তপুরে মারাত্বক ভাবে দেখা দিচ্ছে নদী ভাঙ্গন

No comments

Powered by Blogger.